প্রতি বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। হয়েছে। লাখো মুসল্লিদের অংশগ্রহণে শনিবার সকাল ১০টায় এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ১৮৮তম এই নামাজের জামাতে ইমামতি করেন বিশিষ্ট এনজিও ব্যক্তিত্ব ও ইসলাহুল মুসলিমিনের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
রেওয়াজ অনুযায়ী এখানে ঈদের জামাত শুরুর আগ মুহূর্তে বন্দুকের গুলি ছুঁড়ে নামাজের প্রস্তুতি নেয়ার সংকেত দেয়া হয়।
ঈদগাহে নিরাপত্তার জন্য বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ মাঠে নামাজ আদায় করেন। ঈদ উপলক্ষে ঈদগাহের পাশের সড়কে বেশ কয়েকটি তোড়ন নির্মাণ করা হয়েছে।
জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর তীরে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আগের দিন রাতেই কিশোরগঞ্জে আসেন নামাজে অংশ নিতে। বর্তমানে এ মাঠের জমির পরিমাণ প্রায় সাত একর। তিন লক্ষাধিক মুসল্লি এ মাঠে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে।
নির্বিঘ্নে জামাত অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মাঠের বিভিন্ন প্রবেশ পথে বসানো হয় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। এ ছাড়া মাঠের প্রতিটি প্রবেশ পথে র্যাব-পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হয়। পুরো ময়দান ও আশপাশের এলাকা ঘিরে একাধিক পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদের দিন ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ময়মনসিংহ থেকে একটি ট্রেন ছেড়ে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছায় সকাল সাড়ে ৮টায়। এ ছাড়া ভৈরব থেকে ভোর ৬টায় ছেড়ে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে আসে সকাল ৮টায়। দুটি ট্রেনই দুপুর ১২টার দিকে ছেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ স্টেশন মাস্টার জয়ন্ত কুমার সাহা।
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়রত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় গবেষকদের ভাষ্যমতে, ১৮২৮ সনে প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় সোয়ালাখি মাঠ। উচ্চারণের বিবর্তনে নাম হয়েছে শোলাকিয়া। ১৮২৮ সালে শোলাকিয়ায় প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply